ধনিয়াপাতা,আঁদাকুঁচি,বেরেস্তা আর এক টুকরা লেবু দিয়ে সাজানো একবাটি হালিমের কথা মনে হলে জিভে জল আসেনা এমন বিরল প্রজাতির বাক্য এখনও কর্ণকুহরে প্রবেশ করেনি।রোজায় ইফতারে অনেকেই হালিম পছন্দ করেন।
ইতিহাস বলে হালিম খাবারটি এসেছে আরবের “হারেসা” নামক খাবার থেকে।হায়দ্রাবাদের নিজাম,প্রতিবেশী রাজ্যের সাথে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়লে নিজের দেহরক্ষী এবং সেনা পদে বেশ কয়েকজন আরব কাউসদের নিয়োগ দেন।তাদেরই পছন্দের খাবার ছিল হারেসা/হারিস।
হারেসা রান্না করা হয় দুম্বা/খাসির মাংস দিয়ে।সাথে ব্যবহার করা হয় পার্ল হুইট বা গম,গোলমরিচ গুড়া,মাখন বা অলিভঅয়েল।দারুচিনি, এলাচ ব্যবহার হলেও কখনও সরাসরি ব্যবহার হয়না,পুটুলিতে বেঁধে ব্যবহার করা হয়।মাংসের হাড় আলাদা করে মাংসসহ গম মশলা মিশিয়ে দীর্ঘসময় রান্না করা হয়।রান্না হলে এটাকে পিসে পিসে মিক্স করা হয়।এটা অনেকটা হালুয়ার মত আঁঠালো টেক্চারের হয়।
আমাদের দেশীয় হালিম এই আরব হারেসা থেকে উদ্ভূত এবং রান্না পদ্ধতি অনেকটা একরকম হলেও ব্যবহৃত মশলা এবং ঘনত্বে পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়।অনেক ইতিহাসবিদের মতে,ইয়েমেনের এক অঞ্চলের সুলতান সঈফ নওয়াজ জঙ্গ, হায়দ্রাবাদের নিজামের দরবারে অতিথি হিসেবে আসা যাওয়া করতেন।যখনই তিনি আসতেন তখনই ভোজে হারেসা তৈরি করা হত।মূলতঃ আরব কাউস সেনারাই এ উপমহাদেশে হারেসা বা হারিস তৈরি করে।এরপর স্থানীয় হায়দ্রাবাদী মশলাযোগে হালিমের আকার তৈরি হয়।ওদিকে পাকিস্তানে হালিমকে বলা হয় খিচড়া। হেরিটেজ হিসেবে হালিমের অধিকার কিন্তু হায়দ্রাবাদ পেয়ে গেছে।
হালিমে ব্যবহৃত কয়েক রকমের চাল,ডাল,মশলা এবং অন্যান্য উপকরনের পুষ্টিগুণ আর বলার অপেক্ষা রাখেনা।এককথায় হালিম অনেক পুষ্টিকর এবং ক্যালরি সম্পন্ন খাবার।
ছবিতে আমার তৈরি রেডীমিক্স হালিম ও হালিমের স্পেশাল মশলা থেকে তৈরি হালিম।