এমন কথা অনেক অনেক শুনি আর দেখি।আমার মনে শুধু দুটো প্রশ্নঃ
★একটা শিশু কি মাতৃগর্ভ থেকেই ফোন চিনে আসে❓
★ব্রেস্টফীড করলেও কি ফোন দেখে দেখে খায়❓
উপরের উত্তর যদি “না বোধক” হয় তাহলে মনে হয় সমাধানটা অলরেডী এখানেই পেয়ে গিয়েছি।😊।শিশুকে স্ক্রিনটাইম দিবনা? হ্যাঁ দিব,তবে তা এটলিস্ট দেড় বছর-২ বছরের পর এবং অবশ্যই খাওয়ার সময় না।
✅দারুণ কিছু ট্রিকসঃ
জানি মায়েরা ইচ্ছে করে দিতে চাননা,তবে এমন অনেক দেখেছি যারা অসচেতন ভাবেই নিজেরা ইচ্ছে করেই দেন(শান্ত হয়ে যেন খেতে বসে এই আশাতে)।দেখুন শিশুরা চঞ্চল হবেই,সেটা যেকোন সময়ে।আমাদের উচিত তাদেরকে বুঝিয়ে বুঝিয়ে ভালো অভ্যাসে অভ্যস্ত করা।
১. শিশুর বয়স যখন ৬+ মাস এবং বসতে পারছে,তখন বড় প্লেটে করে শিশুকে তার খাবারের কিছুটা দিন।হাতে ধরুক,মাখুক,চিনুক,স্বাদ নিক।পাশাপাশি আপনি খাইয়ে দিন তার খাবারটা।ব্যস।
২.পরিবারের সবাই একসাথে শিশুকে নিয়ে খেতে বসুন।এতে সে টেবিল ম্যানার শিখবে,কিভাবে খাবার শেয়ার করতে হয় তা শিখবে,খাবারের সময় সম্পর্কে ধারণা পাবে।
৩.খাওয়ার টেবিলে সকল ব্যস্ততা দূরে ঠেলে রাখুন।সবাই মিলে মন খুলে গল্প করে খাবার খান।এতে পারিবারিক সম্পর্কের ভ্যালু বুঝবে,খাবারে আগ্রহী হবে।
৪.একটু বড় হলে শিশুকে নিয়ে সবজি,ফ্রুটস কিনুন।তাকে দেখিয়ে দেখিয়ে নাম বলবেন,কালার বলবেন।সে কোন সবজি বা ফ্রুটস পছন্দ করছে জিজ্ঞেস করুন।এতে সে তার মতামতের গুরুত্ব বুঝবে এবং খাবার সিলেকশনে আগ্রহী হবে।
৫.বেবী নাইফ(ফুডগ্রেড প্লাস্টিক বা সফট ম্যাটেরিয়াল) দিয়ে তাকেও একটা সবজি কাটতে দিন।সেটা রান্নায় ব্যবহার করুন।কিচেন সেফ হলে তাকে নিয়েও মাঝেমধ্যে রান্নার একটা দুটো পার্ট করতে পারেন। এতেও শিশু খেতে আগ্রহী হবে।বিশেষকরে নিজে সবজি কেনা,ধোয়া,কাটার বিষয়ে শিশুরা ভীষণ উৎসাহিত হয়।
৬.শিশুকে সাথে নিয়ে কোন সালাদ বা ছোট্ট সবজি গাছ লাগাতে পারেন।ফল বা পাতা হলে কালেক্ট করার সময় শিশুকে দিয়েও করান।এতে সে হেলদি ফুডে আগ্রহী হবে।
৭.কোনটা খেলে কি উপকার হয় এসব গল্পের ছলে বলুন।
৮.শিশুর জন্য তার বয়স অনুযায়ী প্লেট,বাটি,গ্লাস,চামচ দিন।এতে সুন্দর করে পরিবেশন করুন।শিশুরা আগ্রহী হবে।
৯.খাওয়ার বিষয়ে জোর করবেন না।বরং তাকে আগ্রহী করে তুলুন।যখন যতটা খাচ্ছে খেতে দিন।শুধু ফুড ভ্যালুতে খেয়াল রাখবেন।
১০.শিশুর সামনে কখনও কেউ বলবেন না যে– এটা আমি খাইনা,খাবনা,পছন্দ না।সব হেলদি ফুড মজা করে খাবেন।ওরা আমাদের দেখেই শেখে।
১১.হতেই পারে শিশু কোন একটা নির্দিষ্ট খাবার উপকরণ শিশু খেতে চায়না,তাহলে ওটা বাদ দিন।ওই গ্রুপের বিকল্প ফুড দিন।এক সবজি না খেলে আরেকটা দিন।বয়সের সাথে সাথে পরিবর্তন হবে।
আমার শিশু ফোন ছাড়া খেতে চায় না বা আমার শিশু সবজি খেতে চায় না— এসব কথার আগে আমাদের উচিত হাজারটা পন্থায় চেষ্টা করা।একদিন না,বারবার প্রতিদিন। শিখবেই ওরা।