প্রথমেই বলে নিচ্ছি,শিশুদের পাকস্থলী আমাদের মত স্ট্রং নয়,অনেক নাজুক।বিশেষজ্ঞ এবং ডাক্তারগণ পরামর্শ দেন রান্না করা খাবার দুই ঘন্টার মধ্যে খাইয়ে ফেলতে।অর্থ্যাৎ প্রতিবার ফ্রেশ রান্না করে খাওয়াতে।এটা স্বাস্থ্যসম্মত পদ্ধতি।বিশেষ কিছু কিছু স্ন্যাকস টাইপ খাবার ফ্রোজেন করে রাখা যাবে,তবে ভাজার পর অবশ্যই সেটাকে আবার ফ্রোজেন করে আবার গরম করে খাওয়ানো ঠিকনা।ফ্রোজেনও বেশিদিন করে রাখা ঠিক নয়।৭-১০ দিনের জন্য কিছু স্ন্যাকস ফ্রোজেন করে রাখা যায়, যেমনঃ কাবাব,টিকিয়া,কোপ্তা জাতীয় খাবার ইত্যাদি।ফ্রোজেন করতেও হবে সঠিকভাবে।
অনেকেই একবেলা রান্না করা খাবার বাচ্চাকে সারাদিন ধরে খাওয়ান বা রান্না করা খাবার ফ্রোজেন করে রেখে খাওয়ান।এটা স্বাস্থ্যসম্মত পদ্ধতি নয়।এতে অনেকসময় বাচ্চার ফুড পয়জনিং হতে পারে,এবং কোন কোন ক্ষেত্রে তা মারাত্নকও হতে পারে।এমন হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে বলেই ডাক্তারগণ নিষেধ করেন।
অনেকেই বলবেন, আপু আমিতো এভাবে খাইয়েছি কোন সমস্যা হয়নি।কিন্তু এটা কোন যৌক্তিক বিষয় হতে পারেনা।বাসি খাবার কতটা স্বাস্থ্যকর বাচ্চার জন্য তা একটু ডাক্তারের কাছে জিজ্ঞেস করলে বা গুগল করলেও পেয়ে যাবেন।তাছাড়া ব্যতিক্রম কখনই উদাহরণ হতে পারেনা।
★যদি একান্তই সিচুয়েশনে পড়ে রান্না করা খাবার ফ্রোজেন করতেই হয় সেক্ষেত্রে কিছু স্টেপ মেনে করতে হবে,I repeat যদি একান্তই সিচুয়েশন বাধ্য করে কখনও কেবলমাত্র তখনই,তবে কিছু নিয়ম অত্যাবশ্যকঃ
১.আপনার পেডিয়াট্রিকের অনুমতি সাপেক্ষেই হতে হবে।অর্থ্যাৎ আপনার শিশুর ডাক্তার যদি অনুমতি দেন,কেবলমাত্র তাহলেই।
২.রান্না করা খাবার রুম টেম্পারেচারে আসার পরপরই তা ফ্রোজেন করা,তবে ২ দিনের বেশি রাখা যাবেনা।
৩.পরিমাণ অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন এয়ারটাইট ফুড কন্টেইনারে রাখতে হবে।একবার বের করার পর তা পুনরায় ফ্রিজে রাখা যাবেনা।চুলায় ভালোভাবে গরম করতে হবে।
৪.যে ফ্রিজে ফ্রোজেন করা হবে তাতে কাঁচা খাবার(Raw) এবং রান্না করা খাবার ভিন্ন ভিন্ন চেম্বারে রাখতে হবে।একই জায়গায় কখনই রাখা যাবেনা।এতে কাঁচা খাবারের কোল্ড টেম্পারেচারের ব্যাকটেরিয়া রান্না খাবারে মিশে মারাত্নক ফুড পয়জনিং ঘটাতে পারে।
৫.কাঁচা সবজি এবং কাঁচা মাছ,মাংস একেবারে ভিন্নভাবে রাখতে হবে।তেমনি রান্না খাবার এবং কাঁচা মাছ, মাংস ভিন্ন জায়গায়।
৬.ফ্রোজেন করার বক্স,কন্টেইনার অবশ্যই ভালোমানের হতে হবে।যথাসম্ভব প্লাস্টিক পণ্য এড়িয়ে যাওয়া ভালো।কেননা অনেক প্লাস্টিক জার বিপিএ ফ্রি থাকেনা,এবং ঐ খাবার গরম করা হলে সেই মারাত্নক ক্ষতিকর বিপিএ খাবারের সাথে সংমিশ্রণ ঘটায়,যা উচ্চ পর্যায়ের স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।
★রান্না করা খাবার স্বাভাবিক তাপমাত্রায় কতক্ষণ ভালো থাকে❓
রান্না করা খাবার স্বাভাবিক তাপমাত্রায় দুই ঘন্টা ভালো থাকে।এরপরই ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ ঘটতে থাকে।একারণে রান্না করা খাবার বা তৈরিকৃত খাবার ডাক্তারগণ এবং বিশেষজ্ঞগণ দুই ঘন্টার মধ্যেই খাওয়াতে বলেন।
★তাহলে কি রান্না করা খাবার ফ্রোজেন করে বাচ্চাকে খাওয়ানো যাবে❓
শুরুতেই বলা হয়েছে,এটা করার আগে অবশ্যই যার যার পেডিয়াট্রিকের পরামর্শ নিতে হবে,তিনি অনুমতি দিলেই কেবলমাত্র ফ্রোজেন করে খাওয়ানো যাবে।তবে এই অনুমতি সাধারণত তারা দিবেন না।কারণ ঐ একটাই,শিশুদের পাকস্থলী এবং রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা দূর্বল থাকে,নাজুক থাকে।তাছাড়া এটা স্বাস্থ্যসম্মত পদ্ধতিও নয়।
এরপরও একান্তই হঠাৎ বিপদে পড়ে করতে হলে অবশ্যই উপরের শর্তাবলী মেনে করতে হবে।এসব এনশিওর করতে না পারলে বাচ্চাকে প্রতিবেলায় ফ্রেশ খাবার খাওয়ানোই উচিত,তা হয় যদি একটু কষ্টের,তবুও।কেননা বাচ্চার সেফটি ইস্যু সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ এবং এবিষয়ের দায়ও আপনারই।