Blogs

খাদ্যাভ্যাস এবং লাইফস্টাইল

বর্তমান বিশ্বে উপরের দুটির হিসেবেই জাপান অনেক এগিয়ে অন্যদের থেকে।জাপানি মিলগুলো খেয়াল করলে দেখা যায় ওরা প্রতিটা মিলে সুষম খাবার রাখছে,অর্থ্যাৎ ৬ টি খাদ্য উপাদানের সবগুলোই রাখে তারা।কার্বস,ভালো মানের প্রোটিন(তা যত অল্পই হোক),সবুজ শাক/সবজি,হেলদি ফ্যাট(ভোজ্যতেল,তিল তেল,আনসল্টেড বাটার),দুগ্ধ বা দুগ্ধজাত খাবার সবই মিল মেন্যুতে রাখা হয়।

জাপানিজ স্কুলের বাচ্চাদের টিফিন পিরিয়ডের মিলের উপর পড়তে গিয়েও দেখলাম ওরা খাবারে সুষম বিষয়টা বেশ খেয়াল করে।

আবার লাইফস্টাইলের দিক থেকেও ওরা বেশ উন্নত এবং নিয়মানুবর্তী।সেই কাক ডাকা ভোরে তাদের ঘুম ভাঙে,সারাদিন প্রপারলি কাজ, এরপর রাতে ঠিকঠাক ঘুম।হাঁটা,সাইক্লিং থেকে শুরু করে এক্সারসাইজও।সব মিলিয়েই কিন্তু ওদের গড় আয়ু এত বেশী!আবার,মেধা সম্পন্ন জনবল হিসেবেও তারা এগিয়ে।প্রযুক্তিতে তারা কতটা উন্নত বলার অপেক্ষা রাখেনা।

তাদের সাথে আমাদের পার্থক্য সব জায়গাতেই।আমাদের বাঙালি খাদ্যাভ্যাস ততটা উন্নত নয়,এখানে উন্নত বলতে সুষম বলা হয়েছে,দামী বা কমদামীর হিসেবে নয়।তারউপর ভেজাল তো গোদের উপর বিষফোঁড়া হয়ে আছেই।দেখুনতো আমরা প্রতি মিলে কি সুষম খাবার গ্রহণ করি? পরিবারের পুষ্টির চাহিদার কথা ভাবার আগে আমরা কি “মুখরোচক” এর কথা ভাবি না বলুন?

লাইফস্টাইলেও আমরা আধুনিক হতে গিয়ে ক্ষতিকর করে তুলেছি।কাক ডাকা ভোরে ক’জনের ঘুম ভাঙে?রাতে ঠিকঠাক সময়ে ক’জন ঘুমাই?নিজেদের কাজ যতটা সম্ভব নিজেরা কতটুকু করি?সব কাজ একজনের উপর চাপানোটাই যেন জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে।বাচ্চা থেকে বুড়ো কেউই নিয়মানুবর্তী নয় এখানে।ফলাফল কি দাঁড়িয়েছে এবং দাঁড়াচ্ছে তা সহজেই অনুমেয়।

শিশুদের ০-৫ বছর বয়সটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এসময়ে তাদের ব্রেন সেল গঠন হয়,কানেকশন তৈরি হয়,মোটকথা মস্তিষ্কের বিকাশ সাধন হয়।তাই এবয়সটায় সঠিক খাবারের সাথে প্রয়োজন সঠিক এক্টিভিটি।বাচ্চারা এবয়সে যত নতুন নতুন গঠনমূলক বিষয় দেখবে,শিখবে তত তাদের ব্রেন ডেভেলপমেন্ট ভালো হবে।খাবারের সাথে এই সঠিক এক্টিভিটি একান্তভাবে জড়িত।খেলাধুলা,এডুকেশনাল খেলনা,রুটিন করে ঘুম থেকে উঠা এবং ঘুমোতে যাওয়া,নিয়মানুবর্তিতা,নৈতিকতা সবই জড়িত,সবকিছু।কোনটাকে অবহেলা করার উপায় নেই,বরং এসবের বেস্ট সময়ই হল এই ছোটবেলা।

এতে কি সব বাচ্চা ভবিষ্যতে ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার আর ক্যাডার হবেই?উত্তরঃ না। তবে আমরা আরও বহুসংখ্যক মেধাসম্পন্ন ব্যক্তি,বিজ্ঞানী,গবেষক ইত্যাদি পেতে পারি।সে যেন চাষ করলেও বেস্টভাবে করতে জানে।আঁকতে জানলেও যেন নিজের সবটুকু ঢেলে সেই কাজটা করে।চিন্তাশীল হয়।সৎ হয়।একজন মানুষ হিসেবে নৈতিকতা সম্পন্ন ভালো মানুষ হয়।আমরা পেতে পারি এমন ভবিষ্যৎ। অবশ্যই পেতে পারি।😊।

(ছবিটা বেশ আগের,ওয়াটার কালারে হাত চুবিয়ে ছবি আঁকার সময়ে😀)।

এই আশাতেই বাঁচি❤️

Leave a Reply

Your email address will not be published.